প্রাণঘাতী করোনায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯ লাখ।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৯৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৩১ হাজার ৬১৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখ ১ হাজার ৯২০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সোয়া ৩ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৬৭ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৬ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৩ জন এবং মারা গেছেন ৩৬১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৪ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৪৫ জন এবং মারা গেছেন ৫০৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৮৬ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৪২১ জন এবং মারা গেছেন ৩৮২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ১৬ হাজার ৯৭১ জন মারা গেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ২৮০ জন এবং মারা গেছেন ১৬৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৫ লাখ ৮৩ হাজার ২২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২১ হাজার ৫২০ জন মারা গেছেন। গত একদিনে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৩১ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২২৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯ হাজার ১৯৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮১ লাখ ১ হাজার ৯৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১৭১ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭১১ জন এবং মারা গেছেন ২২৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬১৪ জন মারা গেছেন। থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৪৫৫ জন এবং মারা গেছেন ১২৮ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩২ হাজার ৬৯৯ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩ লাখ ১১ হাজার ৯৬৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার ৪৭০ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৯১৩ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২২ হাজার ৩৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৬৮ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯ হাজার ৮৪৮ জন এবং মারা গেছেন ২০৫ জন। ভিয়েতনামে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ২৭১ জন এবং মারা গেছেন ৭ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কানাডায় ১১৩ জন, হাঙ্গেরিতে ২৯ জন, হংকংয়ে ১০ জন, ইরানে ১৯ জন, গ্রিসে ৬৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৬ জন, পোল্যান্ডে ৩১ জন এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩৭ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৩ হাজার ৯৭৩ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।